Posts

Showing posts from November, 2009

বসন্তের জন্য অপেক্ষা

Image
  প্রিয় ঋতু কি কেউ জিজ্ঞেস করলে বিভ্রান্ত হয়ে পড়বো। কোনটা প্রিয় ঋতু? সবগুলোই যে প্রিয়! আমার বর্তমান ঠিকানা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম অঙ্গরাজ্য ডেলওয়্যার।এই ডেলওয়্যারে প্রতিটা মৌসুম ভিন্নতা নিয়ে আসে। যেহেতু এখানে প্রতিটা ঋতুর একটা   স্বতন্ত্র অস্তিত্ব  আছে তাই তাদের প্রতি আমার পৃথক পৃথক ভালোবাসা জন্মে গেছে। প্রতিটা ঋতুই নিয়ে আসে অনন্য আমেজ, প্রকৃতি সাজে অনুপম সাজে। সেই সাজ  যেন অন্য ঋতুগুলোর চেয়ে একেবারে ভিন্ন। এই যেমন এখন গুটিগুটি পায়ে এসেছে ঋতুরানী বসন্ত: আকাশে-বাতাসে ঝঙ্কৃত হচ্ছে তার আগমনী সুর, আমি সেই সুর শুনতে পাই।  সবগুলো ঋতু প্রিয় হলেও নিজেকে শীতকালের বড় ভক্ত বলে দাবী করতে পারিনা। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে যার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা, তার পক্ষে ঠান্ডা আবহাওয়াতে মানিয়ে নেওয়া কার্যত কষ্টকর, বিশেষত সেই শীতকাল যদি চার-পাঁচ মাস স্থায়ী হয়। তাই শীতকাল বিদায় নিয়ে যখন বসন্তকাল আবির্ভূত হয় তখন এক একদিন জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ভাবি, "এত্ত সুন্দর একটা দিন দেখার সৌভাগ্য হলো আমার!" শোবার ঘরের জানলা দিয়ে প্রভাতের বাসন্তী রঙের রোদ এসে ভাসিয়ে দেয় কাঠের মেঝে, সাদা আরামকে

অভ্র

অভ্র দারুন একটি সফটওয়্যার, কি সুন্দর করে, কত অল্প সময়েই না বাংলাতে লিখতে পারি। আগে তো কখনও চিন্তাও করিনি যে বাংলাতে কখনও ব্লগিং করতে পারব। আমার মত মানুষ যারা কিনা বাংলাতে টাইপ করতে পারেনা, তাদের জন্য অভ্র একটি বেশী দারুন সফটওয়্যার। মনে হলো অভ্রকে একটা ধন্যবাদ না দিলে নিজেকে অকৃতজ্ঞ মনে হবে। ফেসবুকে কখনও বাংলাতে স্ট্যাটাস লিখতে পারব আগে চিন্তাও করতে পারতাম না, কিন্ত এখন পারি। নিজের ভাষায় কিছু লিখতে পারার আনন্দটা যে একেবারেই অন্যরকম সেটা অস্বীকার করি কি করে? :) ধন্যবাদ, অভ্র!

ঈদ ২০০৯

দেখতে দেখতে আবার আরেকটি কোরবানীর ঈদ চলে আসলো। কিভাবে দ্রুত সময় চলে যায়। মনে হয় এইতো সেদিন প্রবাস জীবনের প্রথম প্রাণহীন ঈদটা কাটালাম। অনেক বন্ধু জুটেনি বলে কারও সাথে দেখাও হয়নি, আড্ডা দেয়া হয়নি, হয়নি কাউকে ঈদ মুবারাক বলা। ভাবতেও অবাক লাগে যে আমার জন্য প্রবাসের ঈদ কতই না পানসে। বরের সাথে সকালে গেলাম মলে। জানি জানি অনেকেই বলবে যে মেয়েমানুষ শপিং করতে পারলেই খুশি। স্বীকার করতে আপত্তি নেই যে আমেরিকাতে শপিং করে সময় কাটাতে আমার ভালই লাগে, শপিং আমার জন্য এক ধরনের recreation এই দেশে, যেটা দেশে ছিলনা কারন দেশে সবসসময়ই করবার জন্য হাতে কোন না কোন কাজ থাকতো। না থাকলেও ফোনে কথা বলবার মানুষ ছিল, ছিল বন্ধুরা, মা, খালাতো বোনেরা। তো যাই হোক, মূল কথাতে ফেরত আসি। সকালে নাস্তা সেরে বের হলাম, উদ্দেশ্য shopping mall। আজ এখানে বছরের সবচেয়ে বড় sale ছিল, যাকে এখানের মানুষেরা বলে Black Friday. মলে গিয়ে দেখি প্রচুর মানুষ, প্রচুর জিনিষ, প্রচুর মানুষ ধুমসে্‌ কেনাকাটা করছে, দেখে বোঝার উপা্য় নেই যে দেশটি একটি বড় ধরনের মন্দার ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। দেখে ভাল লাগলো, ছোট বাচ্চাগুলোকে দেখে নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল, ঈদ এর
ছোট ছোট কত স্মৃতি আজ হাতছানি দেয়। এই পরবাসে এসে নিজের অজান্তেই চোখে জল আসে ভেবে যে কোথায় ছিলাম, আর এখন কোথায় আছি। হ্যাঁ, এটা বললে মিথ্যা বলা হবে যে বিদেশের কোন কিছুই ভাল লাগে না, শুধু থাকতে হবে বলে এখানে পড়ে আছি। বিদেশের অনেক কিছুই ভাল লাগে, ভাল লাগে এখানের নিয়মতান্ত্রিক জীবন, সিস্টেম জিনিষটাকে জেলখানা মনে হলেও মাঝে মাঝে সিস্টেম এর মাঝেও একটা ছন্দ খুঁজে পাই। যখন দেখি যে একটা কাজের জন্য সারাদিন পার করে দিতে হয় না অফিসগুলোর লাল টেপের ফাঁসে পড়ে, তখন মনের অজান্তেই মনটা ভাল হয়ে যায়। যখন দেখি ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে দিতে হয়না রাস্তায়, ট্রাফিক জামে গলদ্ঘর্ম হতে হয়না, তখন বিদেশটাকে ভালই লাগে। ফিরে যাবার পর এই বিদেশটাকে অনেক মিস্‌ করবো। নাহ্‌, স্বিকার করতে লজ্জাবোধ হয়না। কেন, হওয়াটা উচিত ছিল নাকি? কত মধুর সময় কাটিয়েছি এই পরবাসে। মুক্তির স্বাদ মনে হয় এখানে এসেই প্রথম পেয়েছিলাম। গভীর রাতে তারাভরা আকাশের নিচে একা একা কখনও হাটঁতে পারবো আগে ভাবিনি। ভাবিনি যে সাত-সমুদ্র একা একা পার হবো কখনও। অচেনা অজানা মানুষের মাঝে দিনের পর দিন কাজ করতে হবে সেটাও তো আগে ভাবিনি। সাদা, কাল, হলুদ, খয়েরি মানুষের মাঝে মি